কাঁচাবাজারে সিন্ডিকেট

খুলনায় কয়েক মাস ধরে সবজি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। দুই একটি সবজি বাদে প্রায় সব ধরণের সবজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। যদিও বিক্রেতাদের এমন দাবি মানতে নারাজ সাধারণ ক্রেতারা। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৪০ টাকার ওপরে। গত কয়েক মাস ধরেই এ দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা কমেছে। তাছাড়া শীতকালীন সবজি তো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে।

এ অবস্থায় সবজির দাম কমেছে এমন দাবি অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন। তবে বিক্রেতাদের দাবি, সবজির দাম তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে কমেছে। কিছুদিনের মধ্যে আরো কমবে। সরজমিনে খুলনা নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। তবে কিছু সবজির দাম গত মাসের তুলনায় ১০-১৫ টাকা করে কমেছে। এ মৌসুমে যেখানে সবজির দাম ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকার কথা; সেখানে অতিরিক্ত দামে এখনও বিক্রি হচ্ছে।

মঙ্লবার নগরীর সন্ধ্যা বাজারে ব্যাগ হাতে সবজি কিনছেন প্রাইমারীর শিক্ষক মোঃ কাসেম সরদার । তিনি বলেন, বাজারে আগুন ‘সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া। শীতের মৌসুমেও সবজির দাম কমেনি। প্রায় সব সবজির দামই ৫০ টাকার ওপরে। সন্ধ্যা বাজারে কথা হয় সুজন হোসেন নামে আর এক ক্রেতার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি পানির লাইনে (ওয়াসায়) চাকরি করি। প্রতিমাসে মোট বেতন পাই ১৪ হাজার ৫০০ টাকা। ২ ছেলেমেয়েসহ ৪ জনের সংসার। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা ও খাবার কিনতে প্রতিমাসে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।

এছাড়া বাড়িভাড়া বাবদ আরও ২ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকি ৪ হাজার টাকাও যাতায়াত ভাড়া ও অন্যান্য কাজে খরচ হয়। তিনি আরো বলেন, ‘আগে প্রতি মাসে তিন থেকে চার হাজার টাকা মাসশেষে হাতে থাকত। এখন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব টাকা খরচ হয়ে উল্টো মাঝেমধ্যে দেনা করতে হচ্ছে। আমরা মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন কষ্টের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না। আমাদের এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।

খুলনায় বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ছোট আকৃতির ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়, পাতাকপি ৪০ টাকা, লাউ প্রতিপিচ ৩০-৪০ টাকা , বেগুন ৭০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি। অন্যদিকে পোল্ট্রি মুরগির কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৪০ থেকে দেড়শ’ টাকা, সোনালি মুরগি ২শ’ ৫০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি মুরগি ৩শ’ থেকে ৩শ’ ২০ টাকা, দেশি মুরগি ৪শ’ টাকা, সুপার তেল ১শ’ ৫০ টাকা, সোয়াবিন তেল ১শ’ ৬০ টাকা, পাম্প তেল ১শ’ ৪৫ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

গল্লামারী কাচা বাজারের আয়নাল নামে এক ক্রেতার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করে। একজন কিছুটা কম দামে দিতে চাইলে পাশে থাকা অন্যজন রাগ করেন এবং তাদের জরিমানা করতে চাই, সব মিলিয়ে আমাদের মত গরিব পাবলিকের পকেট কেটে টাকা নেয়া হচ্ছে। বাজারে প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন তাহলে আশা করা যায় আমাদের মতো অনেক গরীব পরিবার একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারবে